রেয়নের ইতিহাস?

রেয়নের ইতিহাস?

১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রবার্ট হুক ধারণা দিয়েছিলেন আঠালো পদার্থ থেকে কৃত্রিমভাবে রেশমের ন্যায় আঁশ তৈরি করা সম্ভব। এবং একশত নব্বই বছর পর ১৮৫৫ সালে সুইস রাসায়নিক জর্জ অডিমারস সেলুলোজ নাইট্রেট আবিষ্কার করেছিলেন। তার ৩০ বছর পরে ১৮৮৪ সালে ফ্রান্সের হিলার ডি.চারডোনেন্ট নাইট্রো সেলুলোজ থেকে কৃত্রিম টেক্সটাইল ফাইবার তৈরি করেন। আর ঠিক এজন্যই চারডোনেন্টকে ফাদার অফ দ্যা রেয়ন বলে আখ্যায়িত করা হয়। 

তিনিই সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক আনুকুল্য লাভ করে বাণিজ্যিকভাবে পৃথিবীর প্রথম রেয়ন তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। পরবর্তীতে অবশ্য এ রেয়নের উত্তরণ ঘটিয়ে আরো উন্নত ধরনের রেয়ন আবিষ্কার করা হয়েছে। ১৮২৫ সালে ফেডারেল ট্রে কমিশন (এফটিসি) কর্তৃক অফিশিয়ালি কৃত্রিমভাবে তৈরি টেক্সটাইল ফাইবারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এবং সেলুলোজ থেকে উৎপাদিত আঁশের ক্ষেত্রে রেয়ন নামটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। 

রেয়ন
রেয়ন

পরে এ কৃত্রিম টেক্সটাইল ফাইবার কিছুটা পরিবর্তন করে বিভিন্ন উৎপাদকগণ আরও কিছু কৃত্রিম ফাইবার উৎপন্ন করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক নামে বাজারে ছাড়ে। বিভিন্ন নাম হওয়াতে ক্রেতা সাধারণের বুঝতে অসুবিধা হওয়ায়। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য এফটিসি ১৯৩৭ সালে এক আইন প্রণয়ন করে নির্দেশ দেয়, যে যত প্রকারের কৃত্রিম সোলুলোজ ফাইবার বাজারে ছাড়া হবে তার সবগুলোকেই রেয়ন নামে অভিহিত করতে হবে। 

আরও পড়ুনঃ 


কিন্তু রিয়ন ফাইবারের ব্যবহার নিয়ে তারপরও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তা হল পোশাক উৎপাদকদের ও ক্রেতাদের কৃত্রিম ফাইবারের ব্যবহার নিয়ে বিভ্রান্তি। মূলত চারটি বিভিন্ন ধরনের রেয়ন উৎপাদিত হয়। এদের অনেক বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য ও অনেক বৈশিষ্ট্যের বৈসাদৃশ্য হওয়ার ফলে। রেয়ন ফাইবারের পোশাক কোনটির রং পাকা হয়, কোনটির হয় না, কোনটি ইস্ত্রি করলে নষ্ট বা গলে যায়, আবার কোনোটি বেশ সুন্দর হয়।

এসব বৈসাদৃশ্যের মূলে অন্যতম কারণ হল উল্লিখিত রেয়নগুলো উৎপাদনে দুটি মূল পার্থক্য ছিল। একটি হল আসল সোলুলোজ থেকে পুনঃউৎপাদিত রেয়ন। অপরটি হল সোলুলোজের মিশ্রিত পদার্থ দ্বারা তৈরি রেয়ন। এ পার্থক্যের জন্য বৈশিষ্ট্য ও গুণগত ভিন্নতা দেখা যায়। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এফটিসি এ পরিপ্রেক্ষিতে এক বিধি জারি করে যে সেলুলোজ থেকে উৎপাদিত ফাইবার দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা হবে। 

তার একটি রেয়ন অপরটি হল অ্যাসিটেট। পোশাক প্রস্তুতকারীগণ ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে লেবেলের গায়ে কোন শ্রেণীর ফাইবার কত হারে মিশ্রিত বা ব্যবহার করা হয়েছে তা উল্লেখ করবে। এভাবে রেয়নের আবির্ভাব ঘটে।
Textile BD

Founder and Editor of Textile BD. He is a Textile Blogger & Entrepreneur. He is working as a textile job in Bangladeshi companies.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন