ট্রেডমার্ক বলতে কি বুঝায় | ট্রেড মার্ক করতে কি লাগে

ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন পণ্যকে অন্যের অনুরূপ বা অভিন্ন পণ্য হতে স্বতন্ত্র করার লক্ষ্যে ব্যবহৃত প্রতীককে ট্রেডমার্ক বলে। ঠিক একই উদ্দেশ্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রতীককে সার্ভিস মার্ক বলে। স্বাতন্ত্র্যতাই মার্ক বা প্রতীককের মূল বিষয়।

ট্রেডমার্ক
ট্রেডমার্ক

ডিভাইস, ব্রান্ড, শিরোনাম, লেবেল, টিকেট, নাম, স্বাক্ষর, শব্দ, অক্ষর, প্রতীক, সংখ্যা যুক্ত উপাদান, রঙের সমন্বয় বা এগুলোর যেকোন রুপ সমন্বয় প্রতীকের অন্তর্ভূক্ত হবে।


ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা?

কোন প্রতীক বা মার্কের রেজিস্ট্রেশন ঐ পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে প্রতীকটি ব্যবহারের বিষয়ে রেজিস্ট্রার্ড মালিককে একচ্ছত্র স্বত্ত্ব বা অধিকার প্রদান করে। রেজিস্ট্রার্ড মালিকের অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঐ প্রতীকটি ব্যবহার করতে পারবে না।

রেজিস্ট্রার্ড মার্কটি সুপরিচিত হলে অন্যান্য পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রেও মালিকের এ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে আইন দ্বারা এ অধিকার সুরক্ষিত। এ অধিকার লঙ্ঘিত হলে আদালতে মামলা করে প্রতিকার পাওয়া যাবে।

ট্রেডমার্ক আইন কি?

২০০৯ সালে বাংলাদেশে ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের আইন-কানুন প্রণীত হয়েছে। এর মধ্যে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ অধীনে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের অভিযোগে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনকানুন রয়েছে। 

ট্রেড মার্কের দেওয়ানি আইন কি?

২০০৯ সালের ট্রেডমার্ক আইনে ৯৬ ধারার অধীনে কোন নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের লঙ্ঘন, নিবন্ধিত ট্রেডমার্ক সংশ্লিষ্ট কোন অধিকার, নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের সংশোধিত কোন অধিকার। এবং সাদৃশ্যপূর্ণ কোন ট্রেডমার্ক বা প্রতারণামূলকভাবে কোন ট্রেডমার্ক নিবন্ধিত হয়েছে বা হয়নি চালানো হলে যেকোন স্বত্বাধিকারী অবশ্যই জেলা জজ আদালতে মামলা ও অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। 

আর এই ধারায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত  যেকোন ট্রেডমার্ক নিয়ম-কানুন লঙ্ঘনে উপযুক্ত সাজা, জরিমানা ও প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে।

ট্রেড মার্কের ফৌজদারী আইন কি?

মিথ্যা ট্রেডমার্ক কিংবা ট্রেডমার্কের বর্ণনা ব্যবহার, ট্রেডমার্ক জাল করা ও ট্রেডমার্ক জাল করার যন্ত্র আত্মসাৎ করা ইত্যাদি হল দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪৮২, ৪৮৩ এবং ৪৮৫ ধারার অপরাধ। 
আর এই কাজের শাস্তি হচ্চে সর্বোচ্চ ২ বছর থেকে সর্বনিম্ন ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং সেই সাথে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।

ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের আবেদনের নিয়মাবলী?

ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের আবেদনের জন্য নির্ধারিত ফরম আছে। উক্ত ফরমটি এই ওয়েবসাইটে (www.dpdt.gov.bd কিংবা http://dpdt.portal.gov.bd) Form ও Fees লিংকের Trademarks উপলিংকে Form TM -1 হিসেবে পাওয়া যাবে। উক্ত ফরমটি ডাউনলোড করে যথাযথভাবে কম্পিউটারে চার সেট পূরণ করতে হবে। 

পূরণকৃত ফরমে যথাযথ ফি ও প্রয়ােজনীয় দলিলাদিসহ ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রেশন অফিসের (৯১, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা) নিচ তলায় অবস্থিত তথ্য ও সেবা কেন্দ্রে জমা দিতে হবে। তথ্য ও সেবাকেন্দ্র সঠিকভাবে পূরণকৃত প্রাপ্ত দরখাস্ত গ্রহণপূর্বক দরখাস্তকারীকে ক্রমিক নম্বর সহ একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিবেন। 

বিঃদ্রঃ এখানে উল্লেখ্য যে চট্রগ্রাম বিভাগের দরখাস্ত এ দপ্তরের চট্রগ্রামস্থ শাখা অফিসে (কক্ষ নং-২১৮, সরকারি কার্য ভবন-১, আগ্রাবাদ, চট্রগ্রাম) জমা দিতে হবে। দরখাস্ত ফরম পূরণ করা ও জমা দেওয়ার বিস্তারিত নিয়মাবলিগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
  • Iso A4 সাইজ ও অনুন্য ৮০ জি এম এস কাগজে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
  • আলাদা আলাদাভাবে শ্রেনীভুক্ত পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে পৃথক পৃথক আবেদন করতে হবে ও আবেদন ফরমের নির্ধারিত স্থানে পণ্য কিংবা সেবা কোন শ্রেনীভুক্ত তা উল্লেখ করতে হবে। 
  • কোন ধরণের পণ্য বা সেবা কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত তাও এ দপ্তরের ওয়েবসাইটের Resource লিংকের NICE Classification উপলিংকে পাওয়া যাবে।
  • লেবেল আঁটানাের জন্য আবেদনপত্রের নির্ধারিত স্থানে পরিমিত সাইজ এবং টেকসই কাগজের লেবেল আঠা দিয়ে লাগাতে হবে। 
  • লেবেল হিসেবে কোন মােড়ক বা প্যাকেট বা ফটোকপি গ্রহণযােগ্য হবে না। 
  • তবে লেবেলের মধ্যে কোনটি প্রার্থীত ট্রেডমার্ক তা সুনির্দিষ্টভাবে (TM) হিসাবে চিহ্নিত করে দিতে হবে।
  • উপযুক্ত প্রমাণাদি ছাড়া লেবেলে (R), BSTI, ISO কিংবা এ ধরণের কোন সংস্থার লােগাে থাকতে পারবে না। 
  • লেবেল বা লােগােতে বাংলা কিংবা ইংরেজি ব্যতীত অন্য কোন ভাষা থাকলে আবেদনপত্রের ৬ নং কলামে তার Translation ও Transliteration করে দিতে হবে। 
  • লেবেলের লােগােতে কোন ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা অভিভাবকের অনাপত্তি পত্র জমা দিতে হবে।
  • আবেদন ফরমের ৩ নং কলামে মার্কের বর্ণনা সুন্দরভাবে দাখিল করতে হবে।
  • আবেদন ফরমের নির্ধারিত স্থানে পণ্য বা সেবার বিবরণ দিতে হবে।
  • আবেদন ফরমের ৭ নং কলামের ক অংশে ব্যক্তির নাম এবং তথ্যাবলী (Proprietorship এর ক্ষেত্রে) এবং খ অংশে কোম্পানীর নাম ও তথ্যাবলী Ltd. কোম্পানীর ক্ষেত্রে উল্লেখ করতে হবে। 
  • আবেদনকারী কোম্পানী হলে কোম্পানীটি কোন আইনে গঠিত হয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। যেমনঃ A company organized and existing under the laws of Bangladesh (বাংলাদেশের আইনের অধীনে সংগঠিত এবং বিদ্যমান একটি কোম্পানি)।
  • আবেদন ফরমের ৭ নং কলামের গ অংশে কোম্পানী বা সংগঠনের ব্যবসার ধরণ জানাতে হবে। যেমনঃ প্রস্তুতকারক, আমদানীকারক ও সেবাদানকারী।
  • আবেদন ফরমের ৭ নং কলামের ক কিংবা খ অংশে আবেদনকারীর পত্র যােগাযােগের পূর্নাঙ্গ ঠিকানাসহ উল্লেখ করতে হবে।
  • আবেদন ফরমের ১০ নং কলামে প্রার্থীত মার্কের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখসহ ব্যবহারকাল উল্লেখ করতে হবে।
  • প্রার্থীত মার্কটি ইতােমধ্যে ব্যবহার করা না হয়ে থাকলে উক্ত স্থানে Proposed to be used লিখতে হবে।
  • আবেদন ফরমের নির্ধারিত স্থানে আবেদনকারীর পূর্ণ নাম, স্বাক্ষর, পদবী, ই-মেইল, মােবাইল কিংবা টেলিফোন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
  • আবেদনকারী Priority Claim করলে তার সমর্থনে প্রয়ােজনীয় দলিলাদি দাখিল করতে হবে ও আবেদনের ১১ নং কলাম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  • মার্কের স্বত্বাধিকারী নিজে কিংবা তার আইনজীবী বা তালিকাভুক্ত এজেন্টের মাধ্যমে আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন। 
  • তবে আইনজীবী কিংবা তালিকাভুক্ত এজেন্টের মাধ্যমে আবেদনপত্র দাখিল করলে মূল/সত্যায়িত GPA/PA (TM-10) ফরমে যথাযথ স্ট্যাম্পসহ (GPA এর ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা PA এর ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা দাখিল করতে হবে।
  • আবেদন ফি একটি শ্রেণীর এক বা একাধিক ধরণের পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে ৩৫০০ টাকা রেজিস্ট্রার, ডিপিডিটি এর অনুকুলে যে কোন তফসিল ব্যাংকের বিপরীতে পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে দাখিল করতে হবে।
  • আবেদন দাখিলের পূর্বে আবেদনকারী চাইলে প্রার্থীত মার্কটি ইতােমধ্যে কোন পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত/আবেদিত কি না তা নির্ধারিত ফি সহ ১০০০/- একহাজার টাকা  TM-4 ফরমে আবেদন দাখিলের মাধ্যমে দুই সপ্তাহের মধ্যে জানতে পারেন।
  • আবেদনকারী কর্তৃক দাখিলকৃত দরখাস্ত পরীক্ষা ও নিরীক্ষার পর কোন আপত্তি না থাকলে প্রার্থীত মার্কটি জার্ণালে প্রকাশের জন্য অনুমােদন দেয়া হয়ে থাকে।
  • তবে উক্ত বিষয়টি আবেদনকারীকে অবগত করানাে ও মার্কটি জার্ণালে প্রকাশের জন্য প্রযােজ্য এক হাজার টাকা দাখিল করার জন্য TMR-5 নােটিশে প্রেরণ করা হয়।
  • আবেদনকারী নােটিশ প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে জার্ণাল ফি প্রদান না করলে প্রার্থীত মার্কটি নােটিশ প্রদানপূর্বক পরিত্যক্ত বলে ঘােষণা করা হয়।
  • যথাযথ জার্ণাল ফি প্রদান করলে প্রার্থীত মার্কটি জার্ণালে বিজ্ঞপ্তির জন্য বি.জি প্রেসে মুদ্রনের জন্য প্রেরণ করা হয়ে থাকে।
  • বি.জি প্রেস থেকে মুদ্রনের পর অপােজিশনের জন্য দুই মাস সময় নির্ধারিত থাকে।
  • নির্ধারিত দুই মাস সময়ের মধ্যে প্রার্থীত মার্কটির বিরুদ্ধে অপােজিশন মামলা না হলে আবেদনকারী জার্ণাল দেখে TM-11 এর মাধ্যমে নির্ধারিত ফি ১৫,০০০/- পনের হাজার টাকা সহ ট্রেডমার্ক নিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করবেন।

ট্রেডমার্ক নকল করলে এর প্রতিকার?

নিবন্ধিত ট্রেডমার্ক যদি নকল করা হয়। তবে এর জন্য যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়। এর জন্য জেলা জজ আদালতে মামলা করতে হয়। আবার অনিবন্ধিত ট্রেডমার্ক নকল করা হলে সেক্ষেত্রে পাসিং অফের মামলা করা যায়। পাসিং অফ বলতে বুঝায় অন্যের পণ্য নিজের নামে চালানো। 

এছাড়াও মিথ্যা ট্রেডমার্ক ব্যবহার করা হলে এর জন্য মহানগর বিচারক হাকিম কিংবা প্রথম শ্রেণীর বিচারকের আদালতে মামলা করা যায়। এ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত জেল ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকার জরিমানা হতে পারে। 

এজন্য যেকোন ব্যক্তির ট্রেডমার্ক নির্বাচন ও নিবন্ধনের পূর্বে উক্ত ট্রেডমার্ক অন্য কেউ ব্যবহার করেছে কি না সে সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে।

ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা?

রেজিস্টার্ড ট্রেড মার্কের মালিক মার্কটি ব্যবহারের একচ্ছত্র অধিকার সংরক্ষণ করেন। রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া হয় সাত বছরের জন্য। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে আবেদন করলে ১০ বছরের জন্য নবায়ন করা যায়। 

অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পুনঃপুনঃ নবায়ন করা যেতে পারে। উপমহাদেশে ১৯৪০ সালে ট্রেডমার্কস আইন প্রণয়ন করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ট্রেডমার্কস আইন ২০০৯ চালু আছে।

ট্রেডমার্কের সুবিধা কি কি?

ট্রেডমার্ক যেকোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর এক মূল্যবান সম্পদ। ট্রেডমার্ক ব্যবহারের কারণে যেকোন ব্র্যান্ডের ভ্যালু তৈরী হয় এবং এর ফলে উক্ত প্রতিষ্ঠান যেকোন ধরনের পণ্য বা সেবা বাজারে এনে খুব দ্রুত লাভবান হতে পারে। ট্রেডমার্ক ব্যবহারের মাধ্যমে স্বত্বাধিকারীরা দীর্ঘসময় ধরে তার পণ্য বা সেবার উপর একচ্ছত্র অধিকার ভোগ করে।

ট্রেডমার্ক বা ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য কি ধরনের হতে পারে, সে সম্পর্কে ক্রেতার একটি ধারণা তৈরী হয়। ট্রেডমার্কের কারণে বিক্রেতারা আরও কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমনঃ পণ্যের দাম নিয়ে অহেতুক ক্রেতার সাথে কোন ধরনের সময় নষ্ট করতে হয় না।

ক্রেতার পণ্যটি সংগ্রহ করার পর নষ্ট বা ব্যবহার অযোগ্য হলে আইনগত সুবিধা লাভ করতে পারে। ট্রেডমার্কের বা ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে বিক্রেতাগণ, পরিবেশক ও ডিলারগণ শো-রুমের মাধ্যমে উক্ত পণ্য বিক্রির মাধ্যমে অনেক লাভবান হতে পারেন।

ট্রেডমার্ক প্রতীক এর অর্থ কি?

ট্রেডমার্কের ধরন বুঝানোর জন্য কিছু প্রতীক ব্যবহার করা হয়। সেসব প্রতীকের বিশেষ অর্থ রয়েছে। সাধারণত R, TM, SM এই তিনটি প্রতীক ব্যবহৃত করা হয়। নিম্নে প্রতীকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলঃ 

® প্রতীক কি?

ইংরেজী বর্ণ “R” কে গোল চিহ্নের ভিতরে রেখে ট্রেডমার্ক কিংবা লোগোর পাশে বা কোণায় ইহা বসানো হয়। এটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে ট্রেডমার্কটি যথাযথ রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা অনুমোদিত ও নিবন্ধিত একটি ট্রেডমার্ক। 

তবে বলা বাহুল্য যে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন ব্যতীত এটি ব্যবহার করা হলে সেটি আইনত দন্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

™ প্রতীক কি?

ইংরেজি বর্ণ “T” ও “M” এর সমন্বয়ে (Trade Mark) যে প্রতীকটি ব্যবহার করা হয় সেটি হল অনিবন্ধিত পণ্যের লোগোতে ব্যবহৃত প্রতীক। আর এই প্রতীকটি নিবন্ধিত পণ্যের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়। তবে এটি সাধারণত ক্রেতার কাছে পণ্যের ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে খুব বেশি কাজে লাগে।

℠ প্রতীক কি?

Service Mark বা “SM” প্রতীকটি হল পণ্যের মতো অনিবন্ধিত সেবার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ অনিবন্ধিত পণ্যের ক্ষেত্রে যেমনঃ ™ প্রতীক ব্যবহার করা হয় তেমনি অনিবন্ধিত সেবার ক্ষেত্রে ℠ প্রতীক ব্যবহার করা হয়। এখানে সেবা বলতে হোটেল-মোটেল, বিমান, হাসপাতাল রেস্তোরাঁ, পরিসেবা ইত্যাদিকে বুঝানো হয়।

নিবন্ধিত ট্রেডমার্কের সুবিধা কি কি?

কোনো সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কিংবা পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব ট্রেডমার্ক নিবন্ধিত করলে এক্ষেত্রে তারা আইনগত বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকে। আর সেই হিসেবে কোন ক্রেতা বা ভোক্তা কোন ধরনের প্রতারণার শিকার হন না।

অনিবন্ধিত ট্রেডমার্কের অসুবিধা কি কি?

কোন পণ্যের বা সেবা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করা না হলে আদালতে ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত জটিলতার সৃষ্টি হলে তার প্রতিকার পাবেন না। এছাড়াও ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করা না হলে সংশ্লিষ্ট পণ্যের সুনাম কিংবা ব্র্যান্ড ভ্যালু হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করা না হলে স্বত্বাধিকারীরা তাদের অব্যাহত ব্যবহারের অধিকার থেকে সুবিধা বঞ্চিত হতে পারেন। তাছাড়া অনিবন্ধিত ট্রেডমার্কের স্বত্ত্বাধিকারীরাও ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত জটিলতার সমাধানে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন। 

এক্ষেত্রে অনিবন্ধিত স্বত্বাধিকারীরা সাধারণত নিবন্ধিত স্বত্বাধিকারীদের চেয়ে কিছুটা কম আইনি সুবিধা পেয়ে থাকেন।

পরিশেষে বলা যায় ইতালিতে সর্বপ্রথম ট্রেডমার্কের ব্যবহার শুরু হয়। সাধারণত কোন একটি প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র  চিহ্নটি সেই প্রতিষ্ঠানের কাগজ-পত্র, কার্ড, ক্যাশ মেমো ও অন্যান্য সেবা এবং পণ্যের মোড়কে দেখা যায়। তবে সাধারণত কোন প্রতিষ্ঠানের ট্রেডমার্ক নির্দিষ্ট সময় পর নবায়ন করা যায়। 
Textile BD

Founder and Editor of Textile BD. He is a Textile Blogger & Entrepreneur. He is working as a textile job in Bangladeshi companies.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন