হ্যান্ডবল খেলার কৌশল | হ্যান্ডবল খেলার মাঠের চিত্র

হ্যান্ডবল খেলার উৎপত্তি হয়েছে জার্মানিতে৷ দ্বাদশ ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জার্মান গীত কবিতায় ক্যাচবল (Catch ball) জাতীয় খেলার উল্লেখ আছে৷ ১৯১৭ সালে মহিলাদের ক্রীড়া শিক্ষক বার্লিনের ম্যাক্স হিসার মেয়েদের জন্য হ্যান্ডবল খেলার প্রচলন করেন৷
হ্যান্ডবল
হ্যান্ডবল

১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ হ্যান্ডবল অ্যাসোসিয়েশন গঠিত এবং পরবর্তীকালে তা ফেডারেশনে উন্নীত হয়৷

হ্যান্ডবল খেলার মাঠ?

মাঠের দৈর্ঘ্য ৪০ মিটার প্রস্থ ২০ মিটার৷ দাগগুলো ৫ সেঃ মিঃ চওড়া গোলপোস্টের ভিতরের লাইন ৮ সেঃ মিঃ চওড়া৷ 
হ্যান্ডবল খেলার মাঠের চিত্র
হ্যান্ডবল খেলার মাঠের চিত্র

দৈর্ঘ্যের দাগকে পার্শ্বরেখা ও প্রস্থের দাগকে গোল লাইন বলে৷

গোলপোস্ট

মাটির উপর থেকে ক্রসবারের নিচ পর্যন্ত উচ্চতা ২ মিটার, দৈর্ঘ্য ৩ মিটার৷

গোলসীমা

উভয় গোলপোস্ট হতে ৬ মিটার ব্যাসার্ধ দিয়ে দুই গোলপোস্ট বরাবর রেখা টানতে হবে৷ গোলপোস্টের সমান্তরাল তিন মিটার সোজা রেখা হবে৷

ফ্রি থ্রো লাইন এরিয়া

উভয় গোলপোস্ট হতে ৯ মিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে দুই গোলপোস্ট বরাবর ডট ডপ রেখা এঁকে এরপর গোলপোস্টের সমান্তরাল ৩ মিটার সোজা ডট হবে৷

পেনাল্টি লাইন

গোলপোস্টের মাঝ থেকে ৭ মিটার দূরে গোল লাইনের সমান্তরালে ১৫ সেঃ মিঃ দৈর্ঘ্য রেখাকে বুঝায়৷

চার মিটার লাইন

গোলপোস্টের মধ্যবিন্দু থেকে ৪ মিটার দূরে গোল লাইনের সমান্তরালে ১৫ সেঃ মিঃ দৈর্ঘ্য রেখাকে চার মিটার লাইন বুঝায়৷

খেলার স্থিতিকাল

১৬ বছর বা তার ঊধের্বর ছেলেমেয়েদের জন্য ৩০+১০ (বিরতি) + ৩০ = মিটার৷

১২-১৬ বছর ছেলে মেয়েদের জন্য ২৫ + ১০ (বিরতি) + ২৫ = ৬০ মিটার৷ 

অফিসিয়াল

অফিসিয়াল ৪ জন৷ ২ জন রেফারি, ১ জন সময় রক্ষক ও একজন স্কোরার৷ 

বল

বল হবে গোলাকার চামড়া বা কৃত্রিম পদার্থের তৈরি৷ তবে বাইরের আবরণ পিচ্ছিল হবে না৷

দল গঠন

জন খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠিত হয়৷ ৬ জন মাঠ খেলোয়াড় ও ১ জন গোলরক্ষক হিসেবে খেলবে৷ বাকি ৫ জন অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে থাকবে৷

গোলরক্ষকের জন্য কি কি নিষিদ্ধ?

  • বিপজ্জনকভাবে না খেলা৷
  • বলসহ গোলসীমার বাইরে আসতে পারবে না৷
  • গোলসীমার বাইরে বল ধরে গোলসীমার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না৷
  • পেনল্টি থ্রো করার সময় থ্রোয়ার হাত থেকে বল ছাড়ার পূর্বে ৪ মিটার লাইন বা তার বর্ধিত অংশ অতিক্রম করতে পারবে না৷
  • বল আয়ত্তে থাকার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে নিজস্ব গোল লাইন বা গোল পোস্টের উপর দিয়ে বাইরে খেলাতে পারবে না৷

একজন খেলোয়াড় কি করতে পারে না?

  • ৩ সেকেন্ডের বেশি বল ধরে রাখতে পারে না৷
  • বল ধরে ৩ পদক্ষেপের বেশি নিতে পারে না৷
  • বল ধরার সময় ধাক্কা আঘাত করতে পারে না৷
  • বল হাঁটুর নিচে লাগলে তা বৈধ৷ 

থ্রো-অফ

খেলা শুরু ও গোল হওয়ার পর থ্রো অফের মাধ্যমে খেলা শুরু হয়৷

যে যে কারণে ফ্রি থ্রো দেওয়া হয়?

  • ত্রুটিপূর্ণ খেলোয়াড় বদলি করলে৷
  • অবৈধভাবে খেলোয়াড় মাঠে প্রবেশ করলে৷
  • গোলরক্ষক নিয়মভঙ্গ করলে৷
  • মাঠে খেলোয়াড় গোলসীমা আইন ভঙ্গ করলে৷
  • ইচ্ছাকৃতভাবে পার্শ্ব বা আউটার গোল লাইন অতিক্রম করে বল খেললে৷
  • প্রতিপক্ষের প্রতি অবৈধ আচরণ করলে৷
  • ত্রুটিপূর্ণ থ্রো অফ ও থ্রো ইন করলে৷
  • মারামারি করলে৷

পেনাল্টি থ্রো দেওয়ার কারণ?

  • মাঠের যে কোন স্থানে একজন খেলোয়াড় অবৈধভাবে আক্রমণকারীর একটি নিশ্চত গোলের সম্ভাবনাকে নষ্ট কর দিলে৷
  • গোলরক্ষক মাঠ থেকে বল নিয়ে গোলসীমায় প্রবেশ করলে৷
  • কোন খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে যদি নিজ গোলসীমায় গোলরক্ষকের নিকট বলটি ব্যাকে পাস করে এবং গোলরক্ষক বলটি স্পর্শ করলে৷
  • একটি নিশ্চিত গোল করার সময় যদি কোন অবৈধ বাঁশির আওয়াজ গোল নষ্ট হয়৷

কলাকৌশল

হ্যান্ডবলের কলাকৌশলগুলো সাধারণত ১. বলা ধরা ২. বল পাস দেওয়া ৩. গোলে বল মারা ৪. বাধা দেওয়া৷

বল ধরা

বল ধরার সময় হাতের আঙ্গুলগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে বলের দিকে দৃষ্টি দেবে এবং হাত বাড়িয়ে দিয়ে বল ধরে কনুই ভেঙ্গে বলটাকে নিজের দেহের কাছাকাছি টেনে নেবে৷ বলের গতি ও অবস্থান বিশেষ কাঁধ বা সামনে ধরা যায়৷

বল পাস দেওয়া

নিজের দলের কাছে বল পাস দেওয়াটা একটা গুরুত্বপূর্ণ কৌশল৷ যেহেতু হ্যান্ডবলের ওজন অনেকটা হালকা ও ছোট সেহেতু বলকে এক হাতে ছুড়ে পাস দেওয়াটাই অনেক সুবিধাজনক৷ তবে অবস্থা অনুসারে দুই হাতেও পাস দেওয়া যায়৷ 

একহাতে ছুড়ে পাস দেওয়ার সময় বলটাকে সাধারণত ডানহাতে ঠিকভাবে ধরে কাঁধের লাইনের পিছনে হাতটা নিয়ে বাম পায়ের উপর ভর রেখে ছুড়তে হয়৷ বল পাস বিভিন্নভাবে হতে পারেঃ
  • কাঁধ বরাবর পাস
  • কব্জি ঘুরিয়ে পাস
  • হাত কোমরের নিচে এনে পাস
  • মাথার উপর দিয়ে পাস ইত্যাদি৷

গোলে বল ছোড়া

হ্যান্ডবলে গোল করতে হলে বল ছুড়ে মারাটাকে ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে৷ বল ছুড়ে গোল করাট কঠিন ব্যাপার৷ কারণ একটা নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে থেকে গোল করতে হয় এবং গোলের আকারেটাও বেশ ছোট৷ 

বলকে বিভিন্ন ছিড়ে মারা পাস দিয়ে ছিড়ে মারা লাফিয়ে ছুড়ে মারা বাউন্স করে মারা ইত্যাদি৷

বাধা দেওয়া

যখন বিপক্ষ দলের খেলোয়াড় বলটাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তখন তাকে এমনভাবে বাধা দিতে হবে যাতে সে বলটাকে নিজ দলের অপর খেলোয়াড়কে বা গোলে ছুড়ে দিতে না পারে৷ 

 এজন্য একাকী বা দুই তিনজন মিলে হাত তুলে প্রাচীর তৈরি করে বা শরীরের অংশ দিয়ে বাধা দিতে হবে৷
Textile BD

Founder and Editor of Textile BD. He is a Textile Blogger & Entrepreneur. He is working as a textile job in Bangladeshi companies.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন