পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্যে রহস্য আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে চালিত অনুসন্ধান বা অভিযানকে মহাকাশ অভিযান বলে। পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্যে সম্পূর্ণ নতুন একটি মহাজাগতিক বিশ্বের আবিষ্কার সকলের মনকেই আনন্দিত করে।
প্রতিনিয়ত মহাবিশ্বকে জানার অবিরাম চেষ্টা চলছে হচ্ছে বিস্তর গবেষণা। আজ মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে যতটুকু সাফল্য অর্জিত হয়েছে তা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কখনো অর্জন করা সম্ভব হতো না।
একবিংশ শতাব্দীরতে মহাকাশ আবিষ্কারে আরও বেশি গবেষণার জন্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিতে হচ্ছে। মহাকাশে মানুষ এবং রোবোটিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে এ বিশ্বখ্যাত এবং এতে বসবাসকারী লোকজনের জন্য তা বিরাট সুফল বয়ে এনেছে।
মহাকাশ অভিযান |
চাঁদের মাটিতে অবতরণ, স্পেস স্টেশন, অন্যান্য গ্রহে মিশন প্রেরণের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা রয়েছে। মহাকাশ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রচুর পরিবর্তনশীল বস্তু কিংবা পরিমাণ ব্যবহার করে জটিল জটিল সব ধরনের গণনার কাজ করার প্রয়োজন হয়।
এগুলোকে বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ এবং অন্যান্য অংশের জন্য জ্যোতিবিদ্যা সম্পর্কিত তথ্যে প্রয়োগ করা হয়। পাশাপাশি মহাকাশযান ও প্রোবগুলোর গতি ও পরিভ্রমষ নিয়েও কাজ করতে হয়।
পৃথিবীর ক্ষেত্রে ভূমি কিংবা আকাশের ভ্রমণ করাটা মানুষের পক্ষে তুলনামূলকভাবে সাধারণ যানবাহনের মাধ্যমে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে মহাকাশের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ত্রুটি বা ভুল গণনার মারাত্মক সব সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
যেগুলোকে খুব সহজে শুধরে নেওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে কম্পিউটারগুলো একটি মিশনের পরিকল্পনা তৈরী এবং মিশন চলাকালীন প্যারামিটারগুলোকে বিশ্লেষণে ডেটার ওপর দ্রুততর এবং আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রদান করে।
কম্পিউটার ছাড়া কার্যকরভাবে মহাকাশ আবিষ্কারের বিষয়টি প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। বিজ্ঞান ও যেকোন ক্ষেত্রে যেখানে বিরাট কোন সাফল্য এসেছে সেখানে সব সময়ই কম্পিউটার জড়িত হয়েছে।
জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে বৃহৎ যেসব আবিষ্কার ঘটেছে সেগুলো টেলিস্কোপ এবং কম্পিউটার ব্যবহার করে এসেছে। মহাশূন্যে বসে গবেষণাকার্য পরিচালনার জন্য পৃথিবীর কক্ষপথের স্পেস স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।
নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবী থেকে গবেষকদের একটি দল স্টেশনে গিয়ে অবস্থান করেন এবং আধুনিক সব প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে দূর নক্ষত্রসমূহের ওপর গবেষণা কার্যকরী চালনা করেন।
স্পেস স্টেশনের কিছু কিছু যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেলে তাদের অনেকেই স্পেস স্টেশনের বাইরে এসে সেগুলো সরিয়ে নিতে হয়। জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে তারা এসব কাজ করে থাকেন।
এসব ক্ষেত্রে তারা পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করেন কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন রোবোটিক ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে।
পৃথিবীর বাইরে সৌরজগতে অন্য কোন গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না সেটা জানার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের মিশন পরিচালনা করতে রোবট ব্যবহার করেন।
মহাকাশ অভিযানের গুরুত্ব?
- কৃত্রিম ভূগর্ভস্থ ও রোবোটিক মহাকাশযানের মাধ্যমে সৌরজগৎ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা ডেটা সংগ্রহ করা যায়।
- কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কণ্ঠস্বর ছবি এবং তথ্য মুহূর্তে পাঠানো যায়।
- কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য দ্বারা বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ব্যবহার পদ্ধতি উন্নয়ন সাধন করেছেন।
- পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পৃথিবীর পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইটগুলো শয়তানি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ।
- কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ এবং রোবটিক মহাকাশযানের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সৌরজগৎ সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন। অন্য কোন গ্রহ থেকে পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য মহাকাশ অভিযান করা হচ্ছে।
- বায়ুমণ্ডল এবং আবহাওয়া সম্পর্কিত সকল তথ্য কৃত্রিম উপগ্রহের ব্যবহার করে সংগ্রহ করা হয়।