শ্রেণীকরণ কি | শ্রেণীকরণ কত প্রকার | শ্রেণিকরণের বিবেচ্য বিষয়

শ্রেণীকরণ কাকে বলে?

অশ্রেণিকৃত তথ্যসারির এককগুলো বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করে বলে সমগ্র তথ্যসারি বা এর বিভিন্ন অংশে অন্তর্নিহিত তত্ত্ব সম্বন্ধে সহজে ধারণা নেয়া যায় না৷ এজন্য গুণ, সময়, ভৌগোলিক অবস্থান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যধারী বিভিন্ন এককগুলোক কতকগুলো দলে সাজিয়ে লেখা হয়৷ এভাবে কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য অনুসারে তথ্যসারির এককগুলোকে কতকগুলো শ্রেণি বা দলে সাজিয়ে লেখার পদ্ধতিকে শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে৷ 
শ্রেণীকরণ
শ্রেণীকরণ

একটি দল বা শ্রেণিতে যে কয়টি সংখ্যা থাকে তাকে ঐ শ্রেণির গণসংখ্যা বা ঘটনাসংখ্যা বলে৷ যেমনঃ মোট লোকসংখ্যাকে বয়সের সাপেক্ষে 0 - 10 বৎসর, 10 - 20 বৎসর ইত্যাদি গুচ্ছে জীবিকা অর্জনের সাপেক্ষে কৃষিজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়৷

শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য কি কি?

প্রধানত প্রাথমিক তথ্যকে বোধগম্য ও সহজ পাঠ্য আকারে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়৷ 

শ্রেণীকরণ কত প্রকার
শ্রেণীকরণ কত প্রকার

তবে নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যগুলো সাধন করার জন্য শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়ে থাকেঃ
  • নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য অনুসারে তথ্য উপস্থাপনের একটি সহজতম উপায়৷ শ্রেণিবদ্ধ তথ্য সাজানো গোছানো ও সংক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে বলে সহজে এটি হতে তথ্যের অন্তর্নিহিত তত্ত্ব সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়৷
  • শ্রেণিবদ্ধকরণের ফলে একই ধরনের বা একই বৈশিষ্ট্যের এককগুলো একত্রে পাওয়া যায়৷ ফলে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে তুলনার কাজ  সহজ হয়৷
  • শ্রেণিবদ্ধ তথ্যকে সহজে সারণিবদ্ধকরণ ও গণসংখ্যা নিবেশনের সাহায্যে উপস্থাপন করা যায়৷
  • শ্রেণিবদ্ধকৃত তথ্যের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য বিষয়সমূহের সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়৷
  • এটি তথ্যকে তুলনা ও মন্তব্য উপযোগী করে তোলে৷
  • শ্রেণিবদ্ধকরণের ফলে কম পরিশ্রমে ও কম সময়ে তথ্য সম্পর্কে ধারণা নেয়া যায়৷
  • অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক তথ্য বাদ দিয়ে তথ্যকে ব্যবহার উপযোগী ও নির্ভরযোগ করে তোলার জন্য শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয়৷

শ্রেণিকরণের বিবেচ্য বিষয়?

নিম্নে শ্রেণিবদ্ধকরণের বিবেচ্য বিষয়গুলো আলোচনা করা হলঃ
  • শ্রেণিবদ্ধকরণ সম্পূর্ণ হতে হবে৷ আংশিক ভিত্তিতে সম্পন্ন করা উচিত নয়।
  • কোন তথ্যশ্রেণি বহির্ভূত অবস্থায় থাকবে না৷
  • একই তথ্যকে একাধিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না৷
  • শ্রেণিবদ্ধকরণ সঠিক ও সুস্পষ্ট হতে হবে৷
  • সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধকরণ করতে হবে৷

শ্রেণীকরণ কত প্রকার ও কি কি?

সংগৃহীত তথ্যসমূহকে তাদের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে চার শ্রেণিতে ভাগ করা যায়ঃ
  • স্থান ভিত্তিক শ্রেণিকরণ
  • সময় ভিত্তক শ্রেণিকরণ
  • গুণ ভিত্তিক শ্রেণিকরণ
  • সংখ্যা ভিত্তিক শ্রেণিকরণ

স্থান ভিত্তিক শ্রেণিকরণ কি?

যখন কোন তথ্য সারির এককগুলোকে ভৌগোলিক অবস্থান বা এলাকা ভিত্তিক পার্থক্য অনুসারে শ্রেণিবদ্ধকরণ করা হয় তখন তাকে ভৌগোলিক অবস্থান ভিত্তিক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলা হয়৷ অবস্থানগত পার্থক্যের ফলে এককগুলোর মধ্যে সংখ্যাত্মক পার্থক্যও পরিলক্ষিত হয়৷  

আর এ পদ্ধতিতে তথ্যসারিকে বিভাগ জেলা উপজেলা ইউনিয়ন গ্রাম ইত্যাদি এককে বিভক্ত করে শ্রেণিবকরণ করা হয়৷ নিচে বাংলাদেশের আটটি বিভাগের জেলার সংখ্যা ভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ দেখানো হলঃ

বিভাগের নাম →  জেলার সংখ্যা

  •   ঢাকা                       9
  •   চট্টগ্রাম                   11
  •   খুলনা                      10
  •   রাজশাহী                  8
  •   রংপুর                       8
  •   বরিশাল                    6
  •   সিলেট                      7
  • ময়মনসিংহ                 9

সময় ভিতিক শ্রেণিকরণ কি?

এ পদ্ধতিতে সংগৃহীত রাশিতথ্যসমূহকে সময়ের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করা হয়৷ উদাহরণস্বরূপ কোন কারখানায় সপ্তাহে বা মাসে বা বৎসরে কি পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদন হয়েছে তার হিসাব লিপিবদ্ধকরণ৷ 

2001 - 2005 সালে বাংলাদেশ চায়ের উৎপাদনঃ


বৎসর    →    চায়ের উৎপাদন (পাউন্ড)

  • ২০০১           ৮৩,৫৭২
  • ২০০২           ৮৭,৭১৫
  • ২০০৩           ৮৯,৩৪৪
  • ২০০৪           ৯১,৪৭২
  • ২০০৫           ৯৪,২১৫

গুণ ভিত্তিক শ্রেণিকরণ কি?

সংগৃহীত রাশিগুলোকে কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের বৈশিষ্ট্য বা গুণের উপর ভিত্তি করে শ্রেণিকরণ করা হয়৷ এরূপ শ্রেণিকরণকে গুণ ভিত্তিক শ্রেণিকরণ বলা হয়৷

উদাহরণঃ

কোন দেশের লোকসংখ্যাকে পুরুষ, মহিলা, শিক্ষিত, অশিক্ষিত ইত্যাদির সাপেক্ষে শ্রেণিকরণ করা হয়৷

সংখ্যা ভিত্তিক শ্রেণিকরণ কি?

তথ্যসারির এককগুলোকে সংখ্যায় প্রকাশ করলে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যধারী এককগুলোর মধ্যে পরিমাণগত পার্থক্য দেখা যায়৷ এ ধরনের পার্থক্যের ভিত্তিতে তথ্যমালাকে শ্রেণিবদ্ধকরণ করাকে পরিমানবাচক শ্রেণিবদ্ধকরণ বলে৷ আয়-ব্যয়, আমদানি-রপ্তানি, দৈর্ঘ্য, ওজন, উচ্চতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে তথ্যসারির এককগুলোর মধ্যে পরিমাণবাচক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়৷ 

কোন নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে তথ্যসারির এককগুলোর মধ্যে বিদ্যমান পরিমাণবাচক পার্থক্যই হচ্ছে এ ধরনের শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তি৷ নিচে বাংলাদেশে প্রজননক্ষম মহিলাদের বয়স ভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ দেখানো হলঃ

বয়স গ্রুপ  →  মহিলার সংখ্যা (হাজারে)

  • 15-19              4018
  • 20-24              3535
  • 25-29              3179
  • 30-34              2471
  • 35-39              2081
  • 40-44              1774
  • 45-59              1277
Textile BD

Founder and Editor of Textile BD. He is a Textile Blogger & Entrepreneur. He is working as a textile job in Bangladeshi companies.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন